রেকর্ডের গতি
রেকর্ডে
শব্দ গ্রহণ করার সময় একটি বিশেষ গতিতে ঘূর্ণিত হয় এবং গতিতে
বাদিত হলে যথাযথ শব্দমান পাওয়া যায়। এর পরিমাপ হয়
ঘূর্ণ/প্রতিমিনিট
(Revolutions per minute)
,
আন্তর্জাতিক পরিমাপ পদ্ধতিতে এর শব্দসংক্ষেপ rpm, RPM, rev/min, r/min
।
রেকর্ড আবিষ্কারের প্রথম দিকে বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন গতির রেকর্ড তৈরি করতো।
এর মান ছিল ৬০ থেকে ১৩০ আরপিএম-এর ভিতরে। ফলে এক কোম্পানির রেকরড অন্য
কোম্পানির বাদন যন্ত্রে যথাযথ মানে শোনা যেতো না। পরে অবশ্য এই আদর্শিক গতি মান
নির্ধারণ করা হয়েছে।
১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দে বার্লিনারের আদি গ্রামোফোন রেকর্ডের গতি ছিল ৭০ আরপিএম।রেকর্ডের আকার:
১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে গ্রামোফোন কোম্পানি ৭৮ আরপিএম-এর একটি আদর্শিক মানের রেকর্ড প্রকাশ করেছিল।
১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে আরসিএ ভিক্টর লেবেল প্রকাশিত হয়েছিল ৩৩.১/৩ ( (33⅓ ) আরপিএম রেকর্ড।
১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে আরসিএ ভিক্টর লেবেল প্রকাশিত হয়েছিল ৪৫ আরপিএম রেকর্ড
আদিকালের রেকর্ড নির্মাণ পদ্ধতি
বিংশশতাব্দীর প্রথমার্ধে শব্দ ধারণ করা হতো মোমের প্রলেপ দেওয়া চাকতিতে। এই
চাকতিতে ধারণকৃত শব্দ বাজানো যেতো না। এই চাকতিকে বলা হতো ম্যাট্রিক্স। রেকর্ডিং
স্টুডিও থেকে এই ম্যাট্রিক্স পাঠানো হতো রেকর্ড তৈরির কারখানায়। সেখানে একটি তামা
জাতীয় একটি চাকতিতে উল্টো ছাপ নেওয়া হতো। তাই একে বলা হতো 'নেগেটিভ' রেকর্ড। একে
কারাখানার ভাষায় বলা হতো 'মাদার' রেকর্ড বা শেল। এই মাদার রেকর্ড থেকে অন্যান্য একটি
চাকতিতে ছাপ দেওয়া হতো। একে বলা হতো পজেটিভ। এই পজেটিভ রেকর্ডে পরিচিতমূলক লেবেল
লাগিয়ে বাজারজাত করা হতো। ভারতীয় রেকর্ড কোম্পানিগুলো সাধারণত প্রথম দিকে একই
লেবেলযুক্ত ১০০টি রেকর্ড উৎপাদন করতো। চাহিদা সাপেক্ষে রেকর্ডগুলোর
পুনর্মুদ্রণ করা হতো।
রেকর্ডে লেবেল
ডিস্ক রেকর্ডের মাঝখানে মুদ্রিত গোলাকার রেকর্ড পরিচিতি থাকে, তাকেই রেকর্ড
লেবেল নামে অভিহিত করা হয়। এইন লেবেলে থাকে রেকর্ড কোম্পানির নাম, রেকর্ডের নম্বর,
বিষয়বস্তু (গান, আবৃত্তি, বাদ্যযন্ত্র)। গোড়ার দিকে শিল্পীর নাম থাকলেও সুরকার বা
গীতিকারের নাম থাকতো না। সে সময়ের আরও দুটি প্রয়োজনীয় বিষয় কেন বাদ দেওয়া হতো,
তা জানা যায় না। এর একটি হলো রেকর্ডের ঘূর্ণন গতি এবং প্রকাশকাল। অবশ্য রেকর্ডের
জ্যাকেটে এসব তথ্য পাওয়া যেতো।
রেকর্ড নম্বর
প্রতিটি মোমের চাকতি তৈরির পর একটি সংখ্যা দেওয়া দেওয়া হতো। এই নাম্বরকে বলা হতো
'ম্যাট্রিক্স নম্বর'। কোনো কোনো রেকর্ড কোম্পানি প্রতিটি নতুন গানের মোমের রেকর্ডের
জন্য সাধারণ সংখ্যা নম্বর ব্যবহার করত। এই নম্বর হতো ইংরেজি নম্বর ধরে। যেমন
1, 2, 3 ইত্যাদি। বিভিন্ন কোম্পানির একই ম্যাট্রিক্স নম্বর যাতে মিলে মিশে না যায়,
তাই ম্যাট্রিক্স নম্বরের আগে বর্ণযুক্ত করা শুরু হয়েছিল।
বিংশ শতাব্দীর প্রথম ৮০ বছরের ভিতরে প্রায় ২০০ স্বতন্ত্র লেবেলযুক্ত রেকর্ড ভারতীয়
রেকর্ড-বাজারে এসেছিল। এর ভিতরে শীর্ষস্থান দখল করেছিল 'হিজ মাস্টার ভয়েস'-এর
রেকর্ডসমূহ। এর ভিতরে কুকুর ও গ্রামোফোন যন্ত্রযুক্ত চিত্র সম্বলিত রেকর্ড বাজারে
এসেছিল ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে।
সূত্র