অনন্তলাল বন্দ্যোপাধ্যায়
(১৮৩২-১৮৯৬ বঙ্গাব্দ)
বিষ্ণুপুর ঘরানা সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীতজ্ঞ।
১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দে (১২৩৯ বঙ্গাব্দ) বাকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার
নাম গঙ্গার নাম গঙ্গানারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মায়ের নাম নারায়ণী দেবী। স্ত্রীর নাম
কৃপাময়ী দেবী। তাঁর পুত্র রামপ্রসন্ন,
গোপেশ্বর ও
সুরেন্দ্রনাথ সঙ্গীত শাস্ত্রে সুখ্যাতি লাভ করেছিলেন।
গঙ্গানারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে হিন্দু শাস্ত্রের সুপণ্ডিত ছিলেন। তাই তিনি তাঁর
একমাত্র পুত্র অনন্তলালকে শাস্ত্রীবিষয়ক পণ্ডিত হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন।
পিতার ইচ্ছানুসারে তিনি শাস্ত্র পাঠ শুরু করেছিলেন। একই সাথে বিষ্ণুপুর ঘরানার
প্রবর্তক এবং বিষ্ণুপুর রাজদরবারের গায়ক
রামশঙ্কর ভট্টাচার্যের
কাছে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের শিক্ষা শুরু করেছিলেন। অল্প দিনের ভিতরেই তিনি
শাস্ত্রীয়
সঙ্গীতে দক্ষ হয়ে উঠেছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি সনাতন হিন্দু শাস্ত্রের পাণ্ডিতের
পরিবর্তে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে সুপণ্ডিত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন।
রামশঙ্কর ভট্টাচার্যের মৃত্যুর পর, ১৮৫৩ খ্রিষ্টাব্দের দিকেতিনি বিষ্ণুপুর রাজদরবারের গায়ক হিসেবে
নিয়োগ পান। এই সময় বিষ্ণুপুরের মহারাজ ছিলেন গোপালসিংহ।
তিনি সভাগায়ক ছাড়াও
মহারাজের দুই পুত্রের সঙ্গীত শিক্ষার দায়িত্ব পান। পরবর্তীয় রাজ রামকৃষ্ণ সিংহের দরবারেও সভাগায়ক
ছিলেন । সে সময় মল্লরাজ্যের বৈষয়িক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় পতিত হয়েছিল। এই
সময় একাধিক রাজা, মহারাজা, ধনী জমিদারদের সঙ্গীতসভায় স্থায়ীভাবে যোগদানের প্রলোভন
থাকা স্বত্ত্বেও, তিনি এই সভা ত্যাগ করেন নি।
তাঁর শিষ্যদের মধ্যে যাঁরা খ্যাতিলাভ করতে সংক্ষম হয়েছিলেন- তাঁরা হলেন – রামপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়,
গোপেশ্বর
বন্দ্যোপাধ্যায়,
সুরেন্দ্রনাথ
বন্দ্যোপাধ্যায়,,
রাধিকাপ্রসাদ
গোস্বামী, হারাধন দেবঘরিয়া, অম্বিকা চরণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দে (১৩০৩ বঙ্গাব্দ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন।