রাধিকাপ্রসাদ গোস্বামী
(১৮৬৩-১৯২৪)
বিষ্ণুপুর ঘরানা সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীতজ্ঞ।
১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর পিতা জগৎচাঁদ ছিলেন প্রখ্যাত পাখোয়াজবাদক।
প্রাথমিক পর্যায়ের তাঁর সঙ্গীতগুরুদের মধ্যে ছিলেন-
যদুভট্ট
,
অনন্তলাল বন্দোপাধ্যায়। এই গুরুদের কাছে তিনি ১১ থেকে ১৫ বৎসর পর্যন্ত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের
পাঠ নেন। ১৫ বৎসর বয়সে তিনি কলকাতায় আসেন এবং বেতিয়া ঘরানার খ্যাতনামা
ধ্রুপদী শিবনারায়ণ মিশ্র ও গুরুপ্রসাদ মিশ্রের কাছে প্রায় ১৫ বছর ধ্রুপদ শেখেন। এই
সময় তিনি গুরুপ্রসাদ মিশ্রের কাছে কিছু খেয়াল গান শেখেন। এই সময় তিনি গুরুপ্রসাদ
মিশ্র, শিবনারায়ণ মিশ্র গোপাল চন্দ্র চক্রবর্তীর (মূলোগোপাল) নিকট অনেক
গান সংগ্রহ করেন।
১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মহর্ষি
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর আহ্বানে আদি ব্রাহ্মসমাজের
গায়ক হিসেবে যোগদান করেন। এছাড়া এই সময় তিনি ঠাকুরবাড়ীর ছেলেমেয়েদের সঙ্গীত শিক্ষকের
দায়িত্ব পালন করেন।
১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে কাশিমবাজার মহারাজ
মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দীর রাজসভার সভাগায়ক হয়ে বহরমপুরে আসেন। সেখানেই
মণীন্দ্রচন্দ্রের অনুপ্রেরণা ও রাধিকাপ্রসাদের পরিচালনায় ‘বহরমপুর সঙ্গীত সমাজ
বিদ্যালয়’ স্থাপিত হয়েছিল। বাংলাদেশে প্রথম প্রতিষ্ঠিত ওই সংগীত বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ছিলেন রাধিকাপ্রসাদ
গোস্বামী ।
১৯১৯-২০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে
রাধিকাপ্রসাদবহরমপুর সঙ্গীত
বিদ্যালয় থেকে অবসর নেন। এরপর তিনি
তাঁর ভাতিজা এবং শিষ্য
জ্ঞানেন্দ্রপ্রসাদ গোস্বামী
কে সঙ্গে নিয়ে তিনি কলকাতার পাথুরিয়াঘাটায় আসেন এবং সেখানকার সঙ্গীতের অন্যতম
পৃষ্ঠপোষক ভূপেন্দ্রকৃষ্ণ ঘোষের বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন। এখানে তিনি একটি
সঙ্গীত-বিদ্যালয় স্থাপন করেন। তিনি বিষ্ণুপুর ঘরানা, খান্ডারবানী ঘরানা ও বেতিয়া ঘরানার ত্রিবেণী সংগম ঘটেছিলেন
সার্থকভাবে।
১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে (২৬ মাঘ ১৩৩১ বঙ্গাব্দ) মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র:
সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান/চতুর্থ সংস্করণ।